Search This Blog

Thursday, July 20, 2017

আমেরিকায় কিডন্যাপিং – a true story - প্রতিম দাস

আমেরিকায় কিডন্যাপিং – a true story
প্রতিম দাস

১৮৭৪ সাল। ১৪ ডিসেম্বর, নিউইয়র্ক। আপার ইস্ট সাইড। সময় রাত। বৃষ্টি পড়ছে। ঘুম ভেঙে গেল মিঃ ভ্যান ব্রান্ট এর। কিসের একটা শব্দ হল যেন? ঝট করে উঠে বসলেন বিছানায়। এবার কানে এলো একটা মৃদু ‘ক্যাঁচ’ শব্দ। এতো সেলারের দরজার আওয়াজ। এতরাতে ওটার দরজা খুলছে কে? কোনো রকম আওয়াজ যাতে না হয় সেদিকে সজাগ থেকে বিছানা থেকে নামলেন মিঃ ব্রান্ট। হাতে নিলেন সাইড টেবিলে রাখা শটগানটা। সন্তর্পণে দরজা খুলে এগিয়ে গেলেন ছেলের ঘরের দিকে। ওকে ডেকে তুলে একে একে বড়ির তিন পরিচারককেও সঙ্গী করলেন। বললেন সন্দেহের কথা।
সশস্ত্র পাঁচটি মানুষ এবার এগোলেন সেলারের দরজার দিকে। একই রকম ভাবে কোন শব্দ না করে। অনুমানে ভুল হয়নি মিঃ ব্রান্ট এর দরজাটা খোলা। আশেপাশে কেউ নেই। কতজন ঢুকেছে ওটার ভিতর?
বেশী অপেক্ষা করতে হল না। এক এক করে দু জন মানুষ উঠে এলো ভুগর্ভস্থ কুঠুরিটা থেকে। কাঁধে মাল বোঝাই থলে। মিঃ ব্রান্ট সজোরে চেঁচিয়ে উঠলেন – হল্ট!! থামো!! উত্তরে এলো গুলি। আন্দাজে চালানো সেগুলি কারো গায়ে লাগলো না। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে গর্জে উঠলো মিঃ ব্রান্ট এর শটগান। কাতর শব্দ করে মেঝেতে পড়ে গেল একজন। দ্বিতীয় জন চকিতে মারলো ঝাঁপ খোলা জানলা দিয়ে। এর মধ্যেই অগ্নিবর্ষণ করে উঠলো জুনিয়র ব্রান্টের হ্যান্ডগান। লক্ষ্যভেদ বাবার মতই। দ্বিতীয় লোকটিও হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল লনের ঘাসে।
কাছে যেতেই যন্ত্রণা ক্লিষ্ট কণ্ঠ স্বরে লোকটি বললো – একটা ছাতা আনুন দয়া করে। আমার খুব ঠান্ডা লাগছে। আমি আপনাদের কিছু বলতে চাই।
মিঃ ব্রান্টের ইশারায় একজন ভৃত্য নিয়ে এলো ছাতা।
মৃত্যুকালীন জবান বন্দিতে লোকটি বললো – আমার নাম জোশেফ ডগলাস। মৃত্যুর দরজায় দাঁড়িয়ে আমি মিথ্যে কথা বলবো না। আমার সঙ্গীর কাছ থেক যাচাই করে নিতে পারেন। ওর নাম উইলিয়াম মোসার। বাড়ি নিউইয়র্ক। আমার কোন চাল চুলো নেই। আমি ওর সাথেই থাকি... চরম যন্ত্রণায় মাঝে মাঝেই কথা থেমে যাচ্ছিলো লোকটার... আমার এক ভাই আর একটা বোন আছে। যদিও গত ২০ বছরে আমি একবারও ওদের দেখিনি। চুরি ডাকাতি আমার পেশা। সৎপথে খেটে রোজগার করা ৪০ ডলার আমার পকেটে আছে। দয়া করে ওটা আমার সৎকারে ব্যবহার করবেন। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই আমি জানিয়ে যেতে চাই আমরা চার্লি রসকে চুরি করেছিলাম।
বহুচর্চিত নামটি শুনেই মিঃ ব্রান্ট জানতে চাইলেন – কেন চুরি করেছিলে ওকে?
ডগলাসের সোজা সাপ্টা উত্তর – ডলারের জন্য।
চার্লি রস এখন কোথায় আছে? জানতে চাওয়া হলে ডগলাস জানালো – মোসারকে জিজ্ঞাসা করুন। ও বলতে পারবে।
মসার যে ইতিমধ্যে মারা গেছে সেটা জানালো হল ডগলাসকে।শুনে বিড়বিড় করে কিছু একটা বললো ডগলাস যা শোনা গেল না। পুনরায় জানতে চাওয়া হল, চার্লি রস এখন কোথায়?
অতি কষ্টে দম নিয়ে ও জানালো – ঈশ্বরের দিব্যি আমি জানি না। পুলিস আমাদের খুঁজছে এটা জানতে পেরেই আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। মোসার ওকে কোথাও পাচার করে দিয়েছিল। তবে কিছু দিনের মধ্যেই চার্লি বাড়ি ফিরে যাবে।
এর কিছু সময় বাদে ডগলাস মারা যায়। গল্পের আকারে যে কাহিনী এখানে বলা হল তার সূত্র ধরেই ১৮৭৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী পেনসিলভানিয়ার আইন বিভাগ ‘কিডন্যাপিং’ কে অপরাধ বলে ঘোষনা করে। চার্লি রসের ঘটনাটি আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম নথিবদ্ধ ‘কিডন্যাপিং’ এর তথ্য‘কিডন্যাপ’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ একটি শিশুকে ধরে বা উথিয়ে নিয়ে যাওয়া। সতের শতকের শেষ ভাগে উত্তর আমেরিকায় চাষাবাদের কাজে লাগানোর জন্য গৃহহীন শিশুদের চোরাগোপ্তা ধরে নিয়ে যাওয়াকে সেসময় বলা হত ‘কিডন্যাপ’।
চার্লি রস এর কিডন্যাপিং এর ঘ টনাটি ঘটে ১৮৭৪ সালে ফিলাডেলফিয়ার এক মফস্বল এলাকায়। মিঃ ক্রিশ্চিয়ান রস এর দুটি সন্তান। চার্লি রস, বয়স ৪ বছর। ওয়াল্টার রস বয়স ৬। ১৮৭৪ এর ১লা জুলাই সহসাই দু ভাই উধাও হয়ে যায় বাড়ির সামনে থেকে। শুরু হয় খোঁজা খুঁজি। ফলস্বরূপ ঐ দিনই ওয়াল্টারকে পাওয়া যায় পামার ও রিচমন্ড স্ট্রীটের কোনার দিকের ‘আন্ট সুসিজ’ এর মিষ্টান্ন দ্রব্য বিক্রির দোকানের সামনে থেকে। এই ওয়াল্টারই এ কাহিণীর শুরুর ঘটনাটি ঘটার পর জোসেফ ডগলাস ও উইলিয়াম মোসারকে শনাক্ত করেছিল এবং জানিয়ে ছিল এরাই তাদের দুভাইকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিল
১লা জুলাই বাড়ি ফিরে এসে ওয়াল্টার যা বলে তা এরকম – গত কয়েকদিন ধরেই দুটো লোক ওদের বাড়ির আশে পাশে ঘোরা ফেরা করছিল। লোভ দেখাচ্ছিল চকলেট কেক ইত্যাদি খাওয়ানোর, যদি ওয়াল্টাররা ওদের সাথে যায় তাহলে। চৌঠা জুলাই, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস উপ ল ক্ষ্যে খরচ করার জন্য যে ২৫ সেন্ট হাতে পেয়ে ছিল ওয়াল্টার সেটা দিয়ে ইচ্ছে মতো কিছু কেনার লোভে ওদের কথায় রাজী হয়ে যায় ও। লোক দুটোর সাথে গাড়ি আছে দেখে সঙ্গে নিয়ে যায় চার্লিকেও। ‘আন্ট সুসিজ’ এর দোকানের সামনে গিয়ে গাড়ি থামায় ওরা। তড়িঘড়ি গাড়ি থেকে নেমে দোকানে ঢুকে যায় ওয়াল্টার। একটু পরে বাইরে এসে দেখে গাড়ি নেই। চার্লিও নেই কোথাও।
এটা যে অপহরণের একটা ঘটনা ঘটেছে তা ঐ সময়ে কারো ভাবনাতেই আসেনি। কারন সাধারণত যে কিডন্যাপ তখন হত সে সময়ে সেটা অনাথ শিশুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। ৩ রা জুলাই যখন অজস্র বানান এবং ব্যাকরনের ভুলে ভরা চিরকুটটি আসে তখন একটা ধারণা হয় আসলে ঠিক কি হয়েছে। চিরকূট টির বক্তব্য ছিল পরিষ্কার। কোন রকম খোঁজ খবর করার চেষ্টা করা হলে শিশুটিকে খুন করা হবে। যদি জীবন্ত ফিরে পেতে আগ্রহী থাকেন তাহলে অর্থ দিতে হবে।
মিঃ ক্রিশ্চিয়ান রসের পাথরের বাড়িটি দেখলে তাকে  যথেষ্ট ধনী ভাবাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবটা একেবারে উল্টো। দেউলিয়া দশা। অপহরণকারীরা নিশ্চিত এটা জানতো না। অর্থের দাবি চিরকুটে থাকলেও পরিমানের কোনও উল্লেখ ছিল না। মিঃ রস এর তখন যা অবস্থা তাতে কোনরকম অর্থ দেওয়াই তার পক্ষে অসম্ভব। উনি হুমকিকে পাত্তা না দিয়ে পুলিসের সাথে যোগাযোগ করলেন। অনেক কথাবার্তা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল সংবাদপত্র মাধ্যমে অপহরণ কাণ্ড ও চিরকুটের বক্তব্য প্রকাশ করা হবে।
সবিস্তারে খবরটি প্রকাশ হওয়ার পর এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটলো। প্রত্যক্ষভাবে যার কোন যোগ কিডন্যাপিং কান্ডের ছিল না। সে সময়ের আইন অনুসারে জনগনের সম্মতি ছাড়া কারো বাড়ি পুলিস সার্চ করতে পারতো না। চার্লি রসের অপহরণের ঘটনা জানতে পেরে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পুলিসের সহযোগিতায় এগিয়ে এলো। যে বা যারা সার্চ করানোর ক্ষেত্রে ইতস্তত করছিল, তারাও বাধ্য হল জনগণের চাপে পড়ে সার্চ করতে দিতে। আর এর ফলে শিশুটিকে না পাওয়া গেলেও উদ্ধার হল অনেক চোরাই মালপত্র।
প্রথম চিরকুট আশার তিন দিন পর এলো দ্বিতীয় চিরকুট। যাতে ২০ হাজার ডলার মুক্তিপণের দাবি। সাথেই গতানুগতিক হুমকি, শিশুটিকে মেরে ফেলার। সাথেই জানানো হল মিঃ রস যেন ‘দি ফিলাডেলফিয়া লেজার’ এ বিজ্ঞাপন দিয়ে জানান দেন যে উনি অর্থ দিতে রাজি।
পুলিশি গোয়েন্দাদের সাথে পরামর্শ করে মিঃ রস বিজ্ঞাপনটিতে লিখলেন সামর্থ্য অনুযায়ী নিয়মাবলী মানতে আমি রাজি। এ ধরনের ধোঁয়াশা পূর্ণ কথা লেখার কারন, গোয়েন্দারা চাইলেন অপহরণকারীদের পক্ষ থেকে আরো কিছু চিরকুট আসুক। যদি কোনও ক্লু মিলে যায়। তা ছাড়া মিঃ রস এর আর্থিক অবস্থা তো সত্যিই খারাপ।
উত্তর দ্রুতই এলো। এরকম কায়দা করা বিজ্ঞাপন দেখে অপহরণকারীরা অধৈর্য হয়ে পড়ছে। যা করার তাড়াতাড়ি করা হোক, না হলে......
মিঃ রস ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন এক কানাকড়িও তিনি অপহরণকারীদের দেবেন না।এই মরমে একটি বিজ্ঞাপন তিনি প্রকাশ করলেন সংবাদপত্রে। এর ফলে চার্লির জীবন যে আরও সঙ্কটে পড়ে গেল বলাই বাহুল্য। আর সে কথা ভেবে ভেবে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন মিঃ রসের স্ত্রী। মিঃ রসে সঙ্কল্প দারুন ধাক্কা খেল এর প্রেক্ষিতে। নতুন বিজ্ঞাপন দিলেন তিনি, অর্থ দিতে রাজি এটা জানিয়ে। উত্তরে যে চিরকুটটি এলো তাতে অপহরণকারীরা জানালো বর্তমান চন্দ্রপক্ষে কোনও রকম লেনদেন সম্ভব নয়।
৩০শে জুলাই এলো নতুন নির্দেশ। মিঃ রসকে নিউইয়র্কগামী রাতের ট্রেনে একটি সাদা স্যুটকেসে দাবির অর্থ নিয়ে উল্লেখিত দিনে যেতে হবে। শেষ কামরার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। নির্দিষ্ট আলোকসঙ্কেত পেলেই ছুড়ে দিতে হবে স্যুটকেসটি।
বোঝা গেল চন্দ্রালোক বিহীন রাতের অপেক্ষায় ছিল দুষ্কৃতীরা। যে কারনে বিগত চন্দ্রপক্ষের দিন গুলিতে লেনদেন করতে চায়নি। যদি কেও ফলো করে। মিঃ রস নির্দেশ অনুসারে কাজ করলেও অপহরণকারীদের দেখা মিলল না। কেও এলোনা আলোক সঙ্কেত দেখাতে। অবশ্য সেদিন স্যুটকেসটিতে কোন অর্থ ছিল না। বদলে ছিল কেবলমাত্র একটি চিরকূট। যাতে লেখা ছিল... অর্থ আর চার্লির আদান প্রদান একসাথে করতে হবে।
কেন কে আসেনি তার উত্তর সহ চিরকুটও এসে গেল এবার। লেখা ছিল পুলিসের সাহায্য নিয়ে আমাদের ধরার পরিকল্পনা করেছিলেন।তাই আমরা এ ফাঁদে পা দিলাম না। সাবধান। দ্বিতীয়বার এই চেষ্টা করলে শিশুটির মৃত্যু অবধারিত।
এবার স্যুটকেসে যে চিরকুট ছিল তা প্রকাশ করা হল সংবাদ পত্রে। যার উত্তর এলো, সম্ভব নয়।
ইতিমধ্যে নিউইয়র্ক পুলিস এক ‘ইনফরমার’ এর কাছ থেক একটা খবর পেলসে জানিয়েছে, চিরকুটগুলোর হাতের লেখা উইলিয়াম মোসার নামে একটা লোকের। আরো জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে এই মোসার ও তার সঙ্গী জোসেফ ডগলাস ছক কষে ছিল এক মিলিওনেয়ার এর সন্তান কে অপহরণ করার। ওকেও ‘অফার’ দিয়েছিল সহযোগী হওয়ার জন্য। এই তথ্যটি নিঃসন্দেহে আশার আলো দেখালো।
ইনফরমারের কথা অনুসারে ফিলাডেলফিয়ার ২৩৫ মনরো স্ট্রীটে হানা দিল পুলিস। ওখানেই  সপরিবারে বসবাস  করতো মোসার। সাথেই থাকতো ডগ লাস। অর্থাৎ একাহিনীর প্রথমাংশে মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে থাকা ডগ লাসের স্বীকারোক্তি সত্যই ছিল। যদিও ঘটনাটি ঘটতে এখনও অনেক দেরী। মনরো স্ট্রীটের বাড়িতে অবশ্য কাওকেই পাওয়া গেল না। প্রতিবেশীদের কথানুযায়ী ওরা নিউইয়র্ক চলে গেছে।
এসময়ে মিঃ রস পেলেন শেষ চিরকুটটি। লেখা ছিল ‘দি নিউইয়র্ক হেরাল্ড’ এ বিজ্ঞাপন দিন কবে আপনি ‘সল অফ টারমাথ-ফিফথ অ্যাভিনিউ’ হোটেলে অর্থ নিয়ে আসবেন এবং কোন রুমে থাকবেন।
১৫ নভেম্বর তারিখ ও রুম নম্বর জানিয়ে হোটেলে অপেক্ষায় থাকলেন মিঃ রস। ব্যর্থ হল প্রতীক্ষা। এলোনা কেই।
এর একমাস পরে ঘটে মিঃ ব্রান্ট এর বাড়ির ঘটনাটি। মৃত্যুকালীন জবান বন্দীতে ‘কিছু দিনের মধ্যেই চার্লি বাড়ি ফিরে যাবে’ ডগলাস জানিয়ে ছিল। কিন্তু সে কোথায় আছে আর কিভাবেই বা ফিরে যাবে বলার জন্য বেঁচে থাকেনি। ডগলাসের ঐ কথার ভিত্তিতে চার্লি যে বেঁচে আছে এই আশায় সারাজীবন মিঃ রস ছেলের খোঁজ চালিয়ে গেছেন। চার্লি ফিরেও আসেনি, ওর কোন খোঁজও মেলেনি। কি হল তাহলে চার্লি রসের???
উইলিয়াম ওয়েস্টার ভেল্ট। মোসার এর শ্যালক। নিউইয়র্কে যে বাড়িতে মোসার আর ডগলাস থাকতো সেখানেই থাকতো ওয়েস্টার ভেল্ট। পুলিসের কাছে সে জানিয়েছিল মোসাররা যে শিশুটাকে অপহরণ করেছে সেটা ও জানতো। ওয়েস্টার ভেল্টএর কথানুযায়ী ১৩ ডিসেম্বর মোসার নাকি ওকে বলেছিল সরাসরি শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই অর্থপ্রাপ্তির। কিন্তু ভেল্ট জানত না শিশুটিকে  কোথায় লুকিয়ে রাখা আছে। তবে ওর ধারনা যেদিন মিঃ রস সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন এক কানাকড়িও উনি দেবেন না এটা জানিয়ে তার পরের দিনই মোসার শিশুটিকে খুন করে।
অপহরণের সাক্ষী হয়েও তথ্য গোপনের দায়ে সাত বছরের কারাদন্ড হয় ওয়েস্টার ভেল্ট এর।
অসমর্থিত তথ্য অনুসারে ওয়েস্টার ভেল্টই চার্লি রসের হত্যাকারী। অপহরণের পর মোসাররা চার্লিকে ওয়েস্টার ভেল্ট এর জিম্মায় রেখে দেয়, নিউইয়র্কে। নিজেরা চলে যায় ফিলাডেলফিয়ায়। চালাতে থাকে চিরকুট পাঠানোর কাজ ও অর্থ আদায়ের পরিকল্পনা। এদিকে সময়ের সাথে সাথে পুলিসি হানাদারি বাড়তে দেখে চার্লিকে খুন করে ইষ্ট নদীতে ফেলে দেয় ওয়েস্টার ভেল্টমোসারদের জানায়, চার্লিকে সে কোন এক আত্মীয়ের কাছে রেখে এসেছে। সময় মতো এনে দেবে।

এই প্রমানবিহীন অংটুকুর কতটুকু সত্যি বা মিথ্যে তা জানা যায়নি। কারন সাত বছরের কারাবাসের মেয়াদ ফুরাতেই বেমালুম গায়েব হয়ে যায় ওয়েস্টার ভেল্টফলে যাচাই করার কোন সুযোগই পাওয়া যায়নি। কিন্তু যথেষ্টই বিশ্বাস জাগায় এই অসমর্থিত তথ্যটি। আজও আনসলভড কেস হিসাবেই থেকে গেছে চার্লি রসের অপহরণ কান্ড।
সমাপ্ত

No comments:

Post a Comment