আজ কঙ্গোর একটি উপকথা
হাও নাসসি[গ্যাজেল] গট
ম্যারিড
গল্প সূত্র রিচারড এডওয়ার্ড
ডেন্নেট এর “নোটস অন দ্য ফোকলোর অফ দ্য ফোরট”
বঙ্গানুবাদ “সময়ের কাজ
সময়ে করো”
নেনপেট্রোর দুই বউ এক সাথে
একই দিনে দুটি মেয়ের জন্ম দিলো। নেনপেট্রো দারুন ধনী । যে কারনে মেয়েদের জন্মের
সাথে সাথেই ঠিক করে রাখলো যখন এদের বিয়ে দেবে তখন এক মুদ্রাও অর্থপণ নেবে না জামাই
এর পরিবারের কাছ থেকে। অবশ্য তারজন্য যার সাথে এদের বিয়ে হবে তাকে বলতে হবে এদের
কি নামে ডাকা হয়।
ওদের নাম রাখা হলো লাঙ্গা আর
লেঙ্গা।
মেয়ে দুটি যখন বড় হলো বিয়ের
বয়স হলো তখন অ্যান্টিলোপ হরিণ গোত্রের একজন এলো ওই মেয়েদের
বিয়ে করার জন্য। অনেক দামী দামী কাপড় চোপড় আর গয়না গাঁটি উপহার রুপে রাখলো এবং
মেয়েদের বিয়ে করতে চাইলো।
নেনপেট্রো বললো, ‘ওসবের কোনও
দরকার নেই। ওদের বিয়ে করতে হলে ওদের কি নামে ডাকা হয় সেটা বলতে হবে।’
এর কোন জবাব বিবাহপ্রার্থীর
কাছে ছিল না ফলে বিদায় নিতে হলো বেচারাকে।
এবার এলো গ্যাজেল গোত্রের
রাজকুমার নাসসি নিজের অতি অনুগত কুকুরকে সাথে নিয়ে। একই আবেদন জানালো। নেনপেট্রো
একই কথা বললো।
‘বাপু হে আমার মেয়েদের নাম
জানো কি?’
‘নাতো! কি নাম ওদের?’
‘সেটাতো আমি বলবো না। ওটা
তোমাকেই জানতে হবে, তবেই ওদের সাথে তোমার বিয়ে হতে পারে।’
একথা শুনে নাসসি খুবই হতাশ হলো।
আর সেই দুঃখের ভার মনে নিয়ে ফিরে গেল সে। ভুলেই গেল সাথে করে নিজের কুকুরটাকে
এনেছিল। এদিকে সব কথাবার্তা মন দিয়ে শুনেছিল কুকুরটা। প্রভুকে দুঃখিত মনে ফিরে চলে
দেখে সে ঠিক করলো যে ভাবেই হোক নেনপেট্রোর মেয়েদের নাম জেনে নিয়ে প্রভুকে বলবে।
অনেকটা সময় বসে থাকলো
কুকুরটা। সন্ধে হয় হয় এমন সময় নেনপেট্রো তার মেয়েদের খেতে ডাকলো নাম ধরে। সেটা
শুনে নিলো কুকুরটা। মনে মনে বললো – এইতো জেনে গিয়েছি। এবার ফিরে যেতে হবে।
যাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিতেই ওর
মাথাটা ঝিম ঝিম করে উঠলো। আসলে সেই কোন সকালে এখানে এসেছে। তারপর থেকে কিছু খাওয়া
হয়নি । অতএব একটু এদিক ওদিক ঘুরে ও একটা বুনোবিড়ালের বাচ্চা শিকার করে খেয়ে নিলো ।
তারপর খুশী মনে নাম দুটো মনে করতে গিয়ে দেখলো, এই যাঃ ও তো ভুলে গেছে ! কি হবে?
আপাতত আবার অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন পথ
নেই। আর একবার কি ডাকবে না নেনপেট্রো ওর মেয়েদের নাম ধরে?
পরের দিন সকালে নেনপেট্রো
বাড়ীর বাইরে এসে কুকুরটাকে দেখতে পেয়ে মেয়েদের ডাকলো । ‘ও লাঙ্গা! ওরে লেঙ্গা ! তাড়াতাড়ি বাইরে আয় কি সুন্দর একটা
কুকুর দেখে যা।’
ওরা বেরিয়ে এসে দেখলো। কিছু
খাবার আর জল দিল খেতে। কুকুরটা মেয়ে দুটোর নাম জপ করতে করতে খাবার আর জল খেয়েই
মারলো ছুট।
একদমে এসে পৌছালো নাসসির
কাছে। নাসসি ওকে দেখে ভারভার গলায় বললো, ‘আরে তুই ফিরে এসেছিস। তোকে ফিরে পাওয়ার
মতো যদি কেউ ওই মেয়ে দুটোর নাম জানাতো তাহলে দারুন মজা হতো রে।’
কুকুরটা বললো, ‘প্রভু আমি
জেনে এসেছি ওদের নাম।’
‘সেকি রে ! সত্যি! কি নাম?
কি নাম? শিগগিরি বল?’
‘উহু তার আগে আমার পুরষ্কার
চাই।’
নাসসি একটা ভালো শুকর শিকার
করে ওকে খেতে দিলো । কুকুরটাও জানালো ওকে নাম দুটো। এই আনন্দে নাসসি বন্ধুদের নিয়ে
ভোজ সভা বসালো। হলো খানাপিনা।
এই আনন্দ উচ্ছাসের পরের দিন
সকালে ওরা গেল নেনপেট্রোর কাছে। নেনপেট্রো একই প্রশ্ন করলো। কিন্তু নাসসি গতরাতের
অত্যধিক পানাহারের ফলে ভুলে গেছে নাম দুটো। ফলে বলতে পারলো না । একরাশ হতাশা নিয়ে
পুনরায় ফিরে আসতে হলো নাসসিকে। সব
জেনে কুকুরটা আবার গেলো নেনপেট্রোর বাড়ীর কাছে। নামগুলো আবার শুনে নিয়ে ফিরে এলো প্রভুর কাছে।
এবার আর কোনও আনন্দ উল্লাস নয়।
তৎক্ষণাৎ সোজা নাসসি গেল নেনপেট্রোর কাছে। বললো, লাঙ্গা
আর লেঙ্গাকে এখানে ডাকুন।আমি
ওদের বিয়ে করতে চাই ।’
নেনপেট্রো খুশী মনে মেয়েদের
তুলে দিলেন নাসসির হাতে।
আমার গল্প ফুরালো নটে গাছটি
মুরালো।
ফিরে আসবো কয়েক দিনের মধ্যেই আবার কোনও এক দেশের কাহিনী নিয়ে।
No comments:
Post a Comment