গ্লুস্ক্যাপ অ্যান্ড দ্য বেবি
বাংলা অনুবাদ
প্রতিম দাস
দেবতা হেরে গেলেন
অ্যাল্গন কুইয়ান উপজাতিদের বিশ্বাস অনুসারে মহান গ্লুস্ক্যাপ প্রথম মানুষ, কালচারাল হিরো,
জাদুকর এবং দেবতা।
মায়া শক্তির অধিকারী দৈত্য প্রজাতি কেওয়াওকুকে হারিয়ে
দিলেন গ্লুস্ক্যাপ। পরাজিত করলেন হিংস্র ডাইনীবিদ্যার অধিকারী মেদেকলিনকে। রাতের
ভয়ঙ্করী আত্মা পামোলা যে আবার গবলিন,
নরখাদক
এবং কালোজাদুর অধিকারিণীদের বন্ধু তাকেও বশ মানালেন । তারপর এক বিশেষ
মহিলাকে গ্লুস্ক্যাপ বললেন ,আর আমার করার মতো কোন কাজ নেই। সব কিছুই এখন আমার
অধীনে।
মহিলাটি মুচকি হেসে
বললেন, ‘আপনি নিশ্চিত তো প্রভু? এখনো কিন্তু এমন একজন আছে যাকে আপনি হারাতে
পারেন নি। আর তাকে কেউ আজ অবধি হারাতে পারেনি। সে যা করতে চায় সেটাই করে।’
গ্লুস্ক্যাপ কথাটা শুনে অবাক হয়ে গেলেন এবং জানতে চাইলেন
কে সেই অমিত শক্তির অধিকারী।
মহিলাতি উত্তর দিলেন, ‘তাকে ওয়াসিস নামে ডাকা হয়। তবে
প্রভু আমার বিনীত অনুরোধ আপনি শুধু শুধু ওর সাথে বিবাদে জড়ানোর চেষ্টা না করলেই
ভালো হয়।’
ওয়াসিস আসলে একটা ছোট্ট বাচ্চা। মাটির ওপর বসে সে একটা লজেন্স
জাতীয় বস্তু চুষছিল আর গুনগুন করে কি সব বকে যাচ্ছিল নিজে মনে । মহান গ্লুস্ক্যাপ
ছিলেন অবিবাহিত। ফলে তার নিজের কোন সন্তান ছিল না। আর তাই জানাও ছিল না কিভাবে
বাচ্চাদের সাথে মিশতে হয় । তবু উনি ওয়াসিসের দিকে তাকিয়ে হাসলেন এবং কাছে আসার
জন্য ডাকলেন। বাচ্চাটা সে ডাক শুনে হাসলো কিন্তু নড়লো না নিজের জায়গা ছেড়ে।
গ্লুস্ক্যাপ সিটি বাজিয়ে পাখির ডাক নকল করে ওকে শোনালেন। ওয়াসিস তাতে ভ্রুক্ষেপ না
করে সেই লজেন্সটা খাওয়ার দিকেই বেশি মন দিলো। এরকম অবাধ্যতার সাথে গ্লুস্ক্যাপের
পরিচয় ছিল না। উনি খুব রেগে গেলেন এবং চিৎকার করে আবার বাচ্চাটিকে ডাকলেন ওনার
কাছে আসার জন্য । না এলে খুব খারাপ হবে এরকম ধমক ও দিলেন। ওয়াসিস তাতেও কোন
ভ্রুক্ষেপ করলো না । বরং এমন এক চিল চিৎকার
ছাড়লো যে স্বয়ং দেবতা গ্লুস্ক্যাপের আওয়াজ চাপা পড়ে গেল।
গ্লুস্ক্যাপ এবার উঠে দাঁড়িয়ে তার সমস্ত জাদুশক্তিকে
আহ্বান জানানোর ভয় দেখালেন। বললেন, তিনি
ভয়ানক সব মন্ত্র, সাঙ্ঘাতিক সব অভিশাপ
উচ্চারন করবেন যদি ওয়াসিস তার কাছে না আসে। । এমন গান গাইবেন যা শয়তানের কবল থেকে মরাকেও
জ্যান্ত করে দিতে সক্ষম। কিন্তু ওয়াসিসকে দেখে মনে হলোনা এসব ব্যপারে তার কোন
আগ্রহ আছে। বরং মুখ দেখে মনে হচ্ছিল এসবে সে মোটেই ভয়ও পাচ্ছে না বা মজা।
অবশেষে হাল ছড়ে দিয়ে গ্লুস্ক্যাপ ওখান থেকে চলে গেলেন। আর এটা দেখে ওয়াসিস বলে
উঠলো, ‘গুউউ!! গুউউ!!’ আর সেই থেকে আজ অবধি রেড ইন্ডিয়ানরা বিশ্বাস করে যখন কোনো
বাচ্চা ‘গুউউ!! গুউউ!!’ বলে আসলে সে মহান গ্লুস্ক্যাপকে দেখতে পায় ।
[অনুবাদকের কথা- খুবই
সাধারন একটি গল্প। কিন্তু আসল কথা হলো পরিবেশ পরিস্থিতি না বুঝে তুমি যদি কোন কাজ
করতে চাও তাহলে সে তুমি যত বড় শক্তিমান হওনা কেন, জেতার আশা নেই বলাই চলে। বাচ্চা
ওয়াসিস যে আসলে তার শত্রু নয় এবং তার কোন কথাই সে বুঝতে পারছে না এটা গ্লুস্ক্যাপ
বুঝতেই পারেন নি। শুধুমুধুই নিজের কিছু উদ্যম ক্ষয় করে ওখান থেকে চলে যেতে বাধ্য
হয়েছেন।]
No comments:
Post a Comment